মৌডুবী
গাজী মোহাম্মদ শফিউদ্দিন
রাঙ্গাবালীর স্বর্গদ্বীপ "মৌডুবী "যার নাম,
সবার মুখে বলা বলি চলছে অবিরাম।
মৌডুবীতে আগের মত মধু নেই আর বেশ,
ঘুরতে আসলে পর্যটকদের কেটে যাবে রেশ।
সকিনা পার্ক আর ঝাঁউবন জুড়ায় সবার প্রাণ,
জাহাজমারার লাল কাঁকড়া বিধাতারই দান।
সূর্যডোবা,সূর্যোদয় প্রকৃতিরই খেলা,
অতিথি পাখির কলরব যেনো মিলন মেলা।
বর্ষাকালের ইলিশ ভাঁজা খেতে বড় মজা,
চৈত্র মাসের তরমুজ যেনো হৃদয় করে তাজা।
খেজুর রস আর চিতই পিঠার জুড়ি মেলা ভাঁড়,
বন্ধু তুমি একবার খেলে আসবে যে আবার।
প্রাচীন কাল থেকেই বঙ্গজনপদ গুলো বিশেষ বিশেষ স্হান,বিশেষ ব্যক্তিত্ব, জনপ্রিয় কোন বস্তু কিংবা ঐতিহাসিক ভাবে বিখ্যাত কোন কিছুর নামানুযায়ী নামকরণ করা হত। মৌডুবী তার ব্যতিক্রম নয়। ভৌগোলিক ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় একসময় এ অঞ্চলে ছিল বিশাল বনভূমি এবং নদী অববাহিকা। কালের বিবর্তে বিভিন্ন রাখাইন সম্প্রদায় এখানে মৎস্য ও বনের পশু শিকার করে ধীরে ধীরে জীবিকা নির্বাহের সাথে সাথে জীবন যাপনের জন্য বসতি গড়ে তোলার চেষ্টা করে। তখন এ সকল দ্বীপে জলদস্যুদের ও হানা ছিল। কালক্রমে রাখাইন সম্প্রদায়েরা বন্যপশু শিকারের সাথে সাথে তাদের প্রধান কাজ হয় মধু সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। প্রচুর জঙ্গলময় দ্বীপ এবং প্রথম দিকে মনুষ্য বসতি কম থাকায় মৌমাছিদের সবচেয়ে পছন্দের এই দ্বীপে তারা আবাস গড়ে তোলে। তারপর থেকে চান্দের শহর সুন্দরবন(পৌরাণিক কাহিনী) মৌয়ালিরা প্রচুর মধু সংগ্রহের জন্য এই দ্বীপে আসতো। প্রচুর মধুতে ভরপুর ছিল এই দ্বীপ। এখানের মানুষেরা অতিথি আপ্যায়ণ করতো মধু দিয়ে। যেনো তারা মধুতে ডুবে থাকতো। আর সেখান থেকেই ভৌগোলিকভাবে স্হানটির নাম হয় মৌডুবী। ২০১৯ সালে মৌডুবী ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়।